প্রকাশিত: Thu, Feb 2, 2023 3:26 PM
আপডেট: Sat, Jun 28, 2025 12:49 AM

হিরো আলমকে স্যার ডাকতে না চাওয়াটা ঠিক আছে!

ব্রাত্য রাইসু : ‘সংসদ সদস্য হলে আমাকে স্যার ডাকতে হবে। এজন্য কিছু শিক্ষিত মানুষ আমাকে আগে থেকেই মানতে পারছিলেন না। আমাকে স্যার বলতে কষ্ট হবে, এমন লোকেরাই ফলাফল পাল্টে আমাকে পরাজিত করেছেন’।Ñহিরো আলম। অশিক্ষিত মানুষের মতো শিক্ষিত মানুষেরও ইচ্ছার মূল্য আছে। তারা যে হিরো আলমকে স্যার ডাকতে চায় না, এইটা যৌক্তিক ও ন্যায্য চাহিদা। 

খেয়াল করলে দেখবেন, অশিক্ষিত মানুষও চায় না শিক্ষিত মানুষ বা রিকশা আরোহীকে স্যার ডাকতে। কিন্তু তারা বাধ্য। এই বর্ণবাদী বাধ্যবাধকতার একটা শেষ দরকার। তবে তাদের এই বাধ্য অবস্থার রূপান্তর অশিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত হিরো আলমকে স্যার ডাকার মধ্য দিয়া ঘটার নয়। প্রতিভা বা টাকা পয়সা দিয়া হিরো আলম পেটি বুর্জোয়ার লেবাস বা ক্লাস কিনতে চাইতেছে। এইটারে ইতর সাম্যবাদীরা মনে করতেছে বিপ্লব! হাঃ হাঃ।

কাউকে স্যার ডাকার মধ্যে যেই হীনতা বা দীনতা হিরো আলমকে স্যার ডাকলে সেইটা উধাও হবে না। বরং আরো বাড়বে। উচ্চ শ্রেণীর, উচ্চ পদের, উচ্চ রুচি ও কালচারের লোকরে স্যার ডাকতে অভ্যস্ত শিক্ষিতরা। তারা হিরো আলমের স্যার ডাক শোনার মধ্যবিত্ত বেশধারী সামন্ত চাহিদা পূরণ করতে আপাতত রাজি হবে না, এইটা স্বাভাবিক ও ন্যায্য অবস্থান। স্যার না ডাকাটাই শিক্ষিত শ্রেণীর দিক থিকা স্বাধীন অবস্থান। কাজেই যেখানে স্বাধীন থাকতে পারবে সেখানে তারা স্যার ডাকবে না বা স্যার ডাকার মত পরিস্থিতি ঘটতে দিবে না। 

এইটা শিক্ষিতদের হিপোক্রিসি না, বরং যেখানে স্বাধীন থাকা সম্ভব সেখানে স্বাধীন থাকার অনুশীলন। এই অনুশীলন ছোটলোকদের মধ্যেও পাইবেন। শিক্ষিতরা কেন অর্ধশিক্ষিত হিরো আলমকে স্যার ডাকতে চায় না, অথচ এলিটদের স্যার ডাকে, এই আপত্তি প্রকরণগত ভাবে সাম্যবাদের পূজিবাদী আপত্তি। হিরো আলম তা বুঝতে পারে নাই তাই অভিমান করছে। সাম্যবাদীরা যখন এইটা বলবে তা হবে তাদের বোকামি বা গণ্ডমূর্খতা। সাম্যবাদ যেহেতু প্রচারেরও বিষয়, তাই সাম্যবাদীদের জন্য বুদ্ধিবৃত্তিক পশ্চাৎপদতা, মফস্বলিয়ানা ও গ্রাম্যতার চর্চা বিপজ্জনক। লেখক: কবি